শিক্ষা উপবৃত্তি টাকা দেওয়ার নামে প্রতারণা গ্রেফতার ৮
আপলোড সময় :
২২-০৪-২০২৪ ০৯:৩০:২২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২২-০৪-২০২৪ ০৯:৩০:২২ অপরাহ্ন
নিউজ ডেস্ক: শিক্ষা উপবৃত্তি টাকা দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন ক্রেডিট র্কাড/ ডেবিট র্কাড ও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রতারণার কাজে জড়িত মূলহোতাসহ ০৮ জন প্রতারক (ওয়েলকাম/হ্যালো গ্রুপ)’কে র্যাব-৫, ৪, ৮, ১০, ১১ ও ১৪ এর যৌথ অভিজানে ঢাকা, জামালপুর, রাজশাহী, নারায়নগঞ্জ, কুমিল্লা ও ফরিদপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
“বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে জোরাল ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থকেে বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধার, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণ, প্রতারক ও অনলাইন জুয়াড়ীদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা র্অজন করতে সক্ষম হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শির্ক্ষাথীদের শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা দেয়ার নাম করে বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট র্কাড/ডেবিট র্কাড ও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে এক শ্রেণীর প্রতারক চক্র বিভিন্ন শির্ক্ষাথীদের অভিভাবকের নিকট থেকে বিপুল পরিমাণ র্অথ হাতিয়ে নেয়। র্যাব এ সকল প্রতারকদের গ্রেপ্তারের লক্ষে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
গত ২৪ র্মাচ ২০২৪ তারিখ আনুমানিক সকাল ১০৪০ ঘটিকায় বোয়ালিয়া মডেল থানাধীন শালবাগান রাজশাহীর বিএনসিসি অফিসে অবস্থানকালে বাদীর ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার ০১৭১৩******* এ অজ্ঞাতনামা মোবাইল নম্বর থেকে ভিকটিমের মেয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাউন্ট শাখায় র্কমরত মোঃ মিজানুর রহমান বলে পরিচয় দিয়ে তার মেয়ের এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়ায় শিক্ষা উপবৃত্তির ২২,৫০০/- টাকা এসেছে বলে জানায়।
উক্ত টাকা বাদীর একাউন্টে চলে যাবে র্মমে একটি ব্যাংকের এটিএম র্কাডের ষোল ডিজিটের নাম্বার দিতে বললে তিনি তার ষোল ডিজিটের নাম্বার প্রদান করলে একটি ওটিপি যাবে বলে জানায়। পরর্বতীতে বাদী মোবাইল মেসেজ অপশনে দেখতে পায় বাদীর একাউন্ট থেকে চার বারে (৫০,০০০+৫০,০০০+৫০,০০০+৫০০)=১,৫০,৫০০/- টাকা প্রতারনামূলকভাবে আত্মসাৎ করে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে বাদী অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানার মামলা নং-৩৯, তারিখ-২৪/০৩/২০২৪ ইং। ধারা-৪১৯/৪২০ পেনেল কোড-১৮৬০ দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তকারী র্কমর্কতা জড়িতদের গ্রেফতারে র্যাব-৫, রাজশাহী’কে অধযাচিনপত্র প্রদান করলে র্যাব-৫, রাজশাহী জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়ন্দো নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৫ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানে যে উক্ত শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা দেয়ার নাম করে ক্রেডিট র্কাড ও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রতারনার কাজে জড়িত শামীম হোসনে (২৯), পিতা-মোঃ শফিকুল ইসলাম, জেলা-টাঙ্গাইল নামক একজনকে রাজশাহী জেলার রাজপাড়া থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত শামীম জানায় যে উক্ত প্রতারনার কাজে সে জড়িত। কিন্তু সে শুধুমাত্র মাঠ লেভেলে মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট হতে টাকা উত্তোলন করে বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে প্রেরণ করতো বলে জানায়।
গ্রেফতারকৃত শামীম হতে প্রাপ্ত তথ্যরে ভিত্তিতে র্যাব ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানা এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন কোম্পানীর সীম র্কাডসহ বেশ কয়েকটি মোবাইল উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত শামীম আরো জানায় উক্ত প্রতারণা চক্ররে সদস্য মোহাম্মদ জাহিদ (৩৪), পিতা-মৃত জয়নুদ্দনি মোল্লা, জেলা- ফরিদপুর বর্তমানে জামালপুরে অবস্থান করছে। পরর্বতীতে আসামী জাহিদকে (৩৪) বিপুল পরিমান সীম র্কাডসহ জামালপুর জেলার সদর থানা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে , গ্রেফতারকৃত জাহিদ ও শামীমকে উক্ত চক্রের সদস্য কাজী সাদ্দাম হোসেন ওরফে আমরি হামজা (২৬), পিতা-কাজী তাজুল ইসলাম, জেলা- কুমিল্লার বিভিন্ন স্থান থেকে বেনামী রেজিস্ট্রিশেনকৃত সীম র্কাড সংগ্রহ করে দেয়। পরর্বতীতে র্যাব আসামী মোঃ সাদ্দাম হোসেন ওরফে মোঃ আমির হামজা (২৬)’কে কুমিল্লা জেলার হোমনা থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয় এবং তার দেওয়া তথ্য মতে একটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানীর সীমর্কাড ক্রয়-বিক্রয় কাজে নিয়োজিত আসামী মোঃ আহাদ গাজী (২৪), পিতা-মোঃ আঃ গাজী, জেলা-গোপালগঞ্জ কে নারায়নগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত জাহিদ ও শামীম এর দেয়া তথ্যমতে আসামী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে জয় (২৬), পিতা-মোঃ জয়নাল ফকির, জেলা-ফরিদপুর’কে ঢাকার কাফরুল থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতারকৃত মোস্তাফিজ এর দেয়া তথ্যমতে আসামী ফরিদপুর জেলার ভাংগা থানা এলাকা হতে পলাতক আরেক মূলহোতা আসামী মোঃ বাপ্পি মোল্লা (২০), পিতা-মোঃ খোকন মোল্লা, জেলা-ফরিদপুর’কে গ্রেফতার করে। তাহাদের দেওয়া তথ্য মতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তার মাধ্যমে মূলহোতা মোঃ জাকির হোসেন হাওলাদার (৪৭), পিতা-মৃত দেলোয়ার হাওলাদার, জেলা-ফরিদপুর এবং মোঃ উসমান গনি মোল্লা (৩৩), পিতা-মোঃ এবাদত মোল্লা, জেলা-ফরিদপুর গনদেরকে ফরিদপুর জেলার ভাংগা থানা এলাকা হতে আটক করে।
উক্ত সময় আসামীদের নিকট হতে র্সবমোট ২৩টি মোবাইল সেট, ৩১০টি সীম র্কাড এবং নগদ-৩,০১,২৭০/-(তিন লক্ষ এক হাজার দুই শত সত্তর টাকা) ও ৯টি ব্যাংক লেনদেনের স্লিপ উদ্ধার করা হয়। উল্লেখ্য থাকে যে উদ্ধারকৃত প্রত্যকেটি সীম র্কাডে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এর একাউন্ট রয়েছে।
এছাড়াও এরুপ ঘটনা সংক্রান্তে (১) ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থানার মামলা নং-১০/২৩৭, তারিখ-০৩/০৪/২০২৪ খ্রিঃ ধারা-২০২৩ সাইবার নিরাপত্তা আইনে ২৩/২৪ তৎসহ ৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০; (২) ডিএমপি এর ডেমরা থানার মামলা নং-০৫/১১৭, তারিখ-০৩/০৪/২০২৪ খ্রিঃ। ধারা-২০২৩ সাইবার নিরাপত্তা আইন ২৩/২৪; (৩) ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার মামলা নং-৩৩/২৫৯, তারিখ-০৮/০৪/২০২৪ খ্রিঃ ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০; এবং (৪) ডিএমপি এর ক্যান্টনমেন্ট থানার জিডি নং-৩৪২, তারিখ-০৮/০৪/২০২৪ খ্রিঃ তে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
ইতোমধ্যে শিক্ষা উপবৃত্তি টাকা দেয়ার নাম করে ক্রেডিট র্কাড/ডেবিট র্কাড ও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রতারনা সারাদেশে ব্যপক চাঞ্চল্যর সৃষ্টি করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিগন শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা দেয়ার নাম করে ক্রেডিট র্কাড/ডেবিট র্কাড ও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রতারনার কথা স্বীকার করেছে।গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Daily Sonali Rajshahi
কমেন্ট বক্স